সরিষা ফুলের নেক্টর থেকে মৌমাছি যে মধু তৈরি করে তাকেই আমরা সরিষা ফুলের মধু।
বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ হেক্টর জমিতে এর চাষাবাদ করা হয়। উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এর চাশাবাদ আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে সরিষা ফুল ফুটতে শুরু করে সাধারণত নভেম্বর মাসে থেকে আর ডিসেম্বার মাস পর্যন্ত এই ফুল থাকে। মাঠে যখন প্রচুর পরিমাণে সরিষা ফুল ফুটতে শুরু করে তখন মৌ চাষিরা তাদের মৌ বাক্স গুলো সরিষার ক্ষেতের পাশে স্থাপন করে। এই সব সরিষা ক্ষেতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মৌমাছির গুন গুন শব্দ ভেসে বেড়ায়। ফুলে ফুলে ঘুরে ক্ষেতের পাশে সাজিয়ে রাখা বক্সে এসে বসে আবার উড়ে যায় ফুলের কাছে। সরিষা ক্ষেতে উড়ে বেড়াচ্ছে লাখ লাখ মৌমাছি। এভাবেই শুধু মাত্র সরিষা ফুল থেকে নেক্টর সংগ্রহ করে তৈরি হয় সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সরিষা ফুলের খাঁটি মধু (জমা মধু)।
বাংলাদেশে সর্বাধিক মধু এই সরিষা ফুল থেকেই সংগ্রহ করা হয়। সারা দেশে সরিষা ফুলের মধু উৎপাদন এর পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কেজির কাছা কাছি।
সরিষা ফুলের টাটকা মধু Extra Light Amber রঙের হয়ে থাকে। তবে নির্দিষ্ট সময় এর পর তা জমে off White রঙের হয়ে যায়।
সরিষা ফুলের মধু বাংলাদেশের সর্বাধিক উৎপাদন হওয়ায় দামেও সস্তা তাই চাহিদাও একটু বেশি থাকে। জমে যাওয়া বিশিষ্টর কারনে অনেক মানুস এই মধু কিনতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে।
এই মধুর স্বাদ সুমিষ্ট ও সরিষার ঝাঁঝালো ঘ্রাণ সমৃদ্ধ। যা অনেকের কাছে পছন্দের আবার অনেকের কাছে খুব একটা পছন্দের হয় না। অন্যান্য মধুর তুলনায় সরিষা মধুর ঘনত্ব একটু বেশি হয়ে থাকে তবে অনেক সময় তা কম ও হতে পারে। যেহেতু এই মধু টি চাষ পদ্ধিতে সংগ্রহ করা হয় তাই এর ঘনত্ব সম্পূর্ণ নির্ভর করে কৃষক এর উপর।
মধু পাতলা হলে মধু তে ফেনা দেখা যায়। আর ঘনত্ব বেশি হলেও সরিষা মধুতে অনেক সময় সামান্য ফেনা হতে পারে।
সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার উপকারিতা
১। এই মধুত অধিক মাত্রায় গ্লুকোজ সমৃদ্ধ হওয়ায় আপনি থাকবেন সতেজ ও প্রানবন্ত।
২। সরিষার ফুলের মধুতে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরিরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ও রক্তে থাকা ফ্রী রেডিক্লস কে ধ্বংস করে রক্ত কে পরিস্কার রাখতে সহায়তা করে।
৩। এই মধু আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
৪। আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম কে নির্বিণ্ণ রাখে ও গ্যাস্ট্রিক বা আলসার নিরাময় করে।