পৃথিবীর সর্ব উৎকৃষ্ট এবং রেয়ার মধু গুলোর মধ্যে অন্যতম এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট এঁর অর্গানিক খলিসা ফুলের মধু। যেটি শুধু মাত্র বাংলাদেশে সাতক্ষীরা রেঞ্জের ভেতরে অবস্থিত সুন্দরবনেই হয়ে থাকে।
মধু প্রিয়দের কাছে এই মধুর কদর থাকে সবথেকে বেশি। প্রকৃত অর্থে আমরা যেসব কারণে মধু গ্রহণ করি তার সবটাই পাওয়া যায় ম্যানগ্রোভ জঙ্গল সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধুতে। ঔষধি উপকারিতা ও মনোমুগ্ধকর সাধের কারণে বাংলাদেশের সকল মধুর মধ্যে এটি প্রথম স্থানে।
গ্রামগঞ্জের সকল উদ্ভিদের তুলনায় এই লবণাক্ত পানিতে বেড়ে ওঠা নানান ধরনের ম্যানগ্রোভ ফুলের মধুতে আল্লাহ তাআলা যেমন দিয়েছেন গুনাগুন তেমনটাই দিয়েছে মনোমুগ্ধকর স্বাদ।
বাংলাদেশ একমাত্র সুন্দরবনের এই প্রাকৃতিক চাকের মধুকেই অর্গানিক বলা হয়। কারণ জঙ্গলের গাছ-গাছালি তার নিজস্ব নিয়মে বেড়ে ওঠে, পরিচর্যার জন্য কোনরকম কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। তাই জঙ্গলের এই প্রাকিতিক চাকের মধুকেই একমাত্র অর্গানিক মেডিসিনাল হানি বলা হয়।
সুন্দরবনের যেসব উদ্ভিদের ফুল থেকে ম্যাক্সিমাম মধু আসে তার মাঝে অন্যতম উদ্ভিদ হলো খলিশা। তাই ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের সবচেয়ে জনপ্রিয় মধু হলো বুনো মৌমাছির তৈরি করা চাকের, খলিশা ফুলের মধু। মৌমাছি হল সম্পূর্ণ মধু তৈরির কারিগর।
তবে যে সিজনে মধু সংগ্রহ করা হয়। সেই সিজনে প্রকৃতিতে যে ফুল বেশি থাকে সেই ফুলের আদিকের উপর মধুর নামকরণ করা হয়। খলিশা ফুলের নামকরণ ও একই নিয়মে করা হয়। মধুর রাজা বিখ্যাত এই খলিশা ফুলের সংগ্রহ করা অনেক কষ্টসাধ্য ও দুঃসাহসিক কাজ। একদিকে রাস্তা ছাড়াই জঙ্গলের ভেতর হেঁটে হেঁটে মধুর চাক খোঁজা। অন্যদিকে কেওরা গাছের শুলো বন ও হেতাল গাছের কাটার যন্ত্রণা, এইভাবে যেতে হয় জঙ্গলের গহীনে। যেখানে বাঘের আক্রমণের আতঙ্ক অন্যদিকে নদীতে কুমিরের আক্রমণ, ও পৃথিবীর সব থেকে বিষধর সাপ কিং কোবরার আক্রমণের ভয়।
এইভাবে মহা ঝুঁকি নিয়ে মধুর ৩ মাস সিজন জঙ্গলে কাটাতে হয় মোয়ালদের। প্রায় প্রতিবছর মধুর সিজনে, মোয়ালদের বাঘের আক্রমণের শিকার হতে হয়। যার মূল্য কখনো টাকা দিয়ে শেষ করা যাবে না। এত পরিশ্রম আর ঝুঁকি নিয়েই আমাদের প্রতিনিধিরা সংগ্রহ করে এই অমূল্য তরল স্বর্ণ।
যার গুনাগুন ও সাধ শুধু বাংলাদেশী নয়, পৃথিবীর দামী দামী মধুর সাথে তুলনা করা হয়। এই মধুতে ঔষধি গুনাগুনের পাশাপাশি প্রচুর শক্তি ও এনার্জি পাওয়া যায়। খেতে খুবই সুমিষ্ট হলেও। মধুতে থাকা প্রাকৃতিক গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ এর মাত্রা থাকে খুবই কম। তাই সুগারের সমস্যা এমন মানুষদের জন্য এটি অন্যান্য মধুর তুলনায় নিরাপদ ও উপকারী।
অন্যান্য মধু সারা বছর কম বেশি পাওয়া গেলেও। এই মধুর চাহিদা বেশি এবং পরিমাণে কম হয় পুরো বছর পাওয়া যায় না। তাই আমরা অল্প সময়ে এই মধু দিতে পারি এরপরে সারা বছর এই মধুর জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আমাদের সাথে অনেক বছর ধরে অনেক সম্মানী মানুষ মধুর গ্রাহক হয়ে আছেন। তাই নিশ্চিন্তে আপনি নিজে নিন। আর প্রিয় মানুষকে উপহার দিন কখনোই নিরাশ হবেন না।